বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে টানা চতুর্থ মাসের পতন

­Bangladesh export decline November 2025

বাংলাদেশের রপ্তানি খাত চলতি অর্থবছরের (২০২৫–২৬) প্রথম পাঁচ মাসে স্থিতিশীলতা দেখালেও নভেম্বর মাসে এসে আবারও ধীরগতির চাপে পড়েছে। টানা চার মাস ধরে রপ্তানি আয় কমার প্রবণতা অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানিকারকদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

 

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে মোট রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। বিশেষত তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, চামড়াজাত পণ্য ও কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে শ্লথতা লক্ষ্য করা গেছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মূল্যস্ফীতি ও চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে এ পতন আরও তীব্র হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

তবে ইতিবাচক দিক হলো, অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস—জুলাই থেকে নভেম্বর—মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০,০২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৬২% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। অর্থাৎ, নভেম্বরে প্রবৃদ্ধি কমলেও সামগ্রিকভাবে খাতটি এখনো খুব খারাপ অবস্থায় নেই।

 

রপ্তানিকারকদের মতে, বৈশ্বিক মন্দা, পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়া, গ্যাস-বিদ্যুতের অস্থিরতা, এবং কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি প্রস্তুতকারকরা বেশি চাপে রয়েছে।

 

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) বলছে, দ্রুত ডলার সংকট সমাধান, জ্বালানি সরবরাহ স্থিতিশীল করা এবং ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় কমানো জরুরি। তা না হলে আগামী মাসগুলোতে রপ্তানিতে আরও বড় ধরনের পতন দেখা যেতে পারে। বিকল্প বাজার ও পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি খাত ক্ষতির মুখে পড়বে।

 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈশ্বিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নীতি-চ্যালেঞ্জও এ সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। রপ্তানি খাতে নগদ প্রণোদনা যথেষ্ট হলেও দক্ষতা উন্নয়ন, প্রযুক্তি নবায়ন এবং সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে বিনিয়োগ পিছিয়ে রয়েছে। সরকারের উচিত উৎপাদনশীলতা বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

 

সব মিলিয়ে, নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয়ে পতন উদ্বেগ তৈরি করলেও, প্রথম পাঁচ মাসের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি একটি আশাব্যঞ্জক বার্তা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক নীতি সহায়তা ও নতুন বাজার খুঁজে পেলে বাংলাদেশ আবারও রপ্তানিতে স্বাভাবিক গতিতে

ফিরতে পারবে।

Read More:­­https://dbnnewstoday.com