
রাজধানী ঢাকায় ‘বাংলা টেসলা’ নামে পরিচিত ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলার, ভ্যান ও রিকশার বিস্তার এখন উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। এই যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ লাইনে অবৈধ সংযোগের কারণে বছরে প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা সমপরিমাণ বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের কর্মকর্তারা। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই পরিবহন ব্যবস্থার কারণে নগরীতে শৃঙ্খলা, সড়ক নিরাপত্তা এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
এসব ‘বাংলা টেসলা’ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া চার্জিং স্টেশন বা অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনে সংযুক্ত করে চার্জ করা হয়। ফলে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না, বরং বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ক্ষতি হচ্ছে। একইসঙ্গে অতিরিক্ত লোডের কারণে এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঝুঁকিও বাড়ছে।
জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক কারখানা, গ্যারেজ কিংবা রিকশা মেরামতের দোকানের আড়ালে চালানো হয় এসব অবৈধ চার্জিং স্টেশন। প্রতিদিন হাজার হাজার যান চার্জ হওয়ায় তাদের চাপ পড়ছে স্থানীয় বিদ্যুৎ লাইনে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (PDB) ও বিতরণ কোম্পানিগুলো এ কারণে বারবার ক্ষতির মুখে পড়ছে।
এমতাবস্থায় সরকার ‘বাংলা টেসলা’ নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রিত নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় রয়েছে—
অবৈধ চার্জিং স্টেশন শনাক্ত ও বন্ধ করা
নিবন্ধনব্যবস্থা চালু
নিরাপদ চার্জিং পয়েন্ট স্থাপন
চার্জিং ফি নির্ধারণ
যানবাহনের মান একীভূতকরণ
চালকদের প্রশিক্ষণ ও সড়ক নিরাপত্তার নিয়ম জোরদার
নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করেন, ‘বাংলা টেসলা’ পরিবেশবান্ধব হলেও এর দ্রুত বিস্তার নিয়ন্ত্রিত না হলে এটি বড় ধরনের নগর বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এসব যান বেশি সংখ্যায় থাকলে যানজট, দুর্ঘটনা ও বেপরোয়া চলাচল বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে অনেক শ্রমজীবী মানুষের কাছে বাংলা টেসলা জীবিকায়নের প্রধান মাধ্যম। তারা মনে করেন, সরকার যদি বৈধ চার্জিং ব্যবস্থা ও নিবন্ধন সহজ করে দেয়, তাহলে কর্মসংস্থান বজায় রেখে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর কঠোর নজরদারি এবং নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা বলেন, “যানবাহন নিষিদ্ধ নয়, তবে নিয়ন্ত্রিত হবে। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার সা
থে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।”
Read More:https://dbnnewstoday.com