তিনটি সিনেমাই তার জীবনের ভুল,অঞ্জন দত্তের খোলা চিঠিতে তীব্র আত্মসমালোচনা

ওপার বাংলার জনপ্রিয় এক অভিনেতা ও নির্মাতা নিজের তিনটি সিনেমা নিয়ে আজও লজ্জা ও বিব্রত বোধ করেন—এমন অকপট স্বীকারোক্তি খুব কমই দেখা যায়। দীর্ঘ ৪৫ বছরের ক্যারিয়ারে বহু বাছাই করা কাজ করলেও, কয়েকটি চলচ্চিত্র নিয়ে তার অস্বস্তি এখনও কাটেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ লেখায় তিনি জানালেন, সব চেষ্টার পরও মাঝে মাঝে এমন কিছু কাজ হয়ে যায়, যা নিজের পরিচয়ের সঙ্গে মানানসই হয় না।

 

তিনি বলেন, নিজের কর্মজীবনে সবসময় নিম্নমানের গান, সস্তা কনটেন্ট বা মধ্যমেধার কাজ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছেন। তবু কিছু ভুল সিদ্ধান্ত থেকে গেছে, যা আজও তাকে ভাবায়। বয়স ৭০ পেরিয়েও তার কৌতুকবোধই তাকে টিকিয়ে রেখেছে। শীতের রোদ, নদীর ধারে ভ্রমণ কিংবা পরিচিত শহরের সোনালি আলো—এসবই তাকে আবার জীবনের প্রতি আশাবাদী করে তোলে।

বর্তমানে সিনেমা হলে দর্শক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তার মতে, অতিরিক্ত প্রচার, অগণিত পোস্টার কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড়—এসব দিয়েও দর্শককে হলে আনা যাচ্ছে না। তিনি স্বীকার করেন, তিনিও সেই চেষ্টার দলে আছেন, কিন্তু অভিনয় যদি মানুষের ভালো না লাগে, তাহলে স্টারডম দিয়ে কিছুই হয় না।

 

আরও বলেন, সাংবাদিকতা, রিভিউ বা পডকাস্ট দিয়ে দর্শকের মনোভাব বদলানো যায় না। বাজার গরম বা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করা হলেও, শেষ সিদ্ধান্ত দর্শকের। তাদের সময়ের অভাব বা আর্থিক টানাপোড়েন নয়—বরং পছন্দের জায়গা থেকে তারা সিনেমার হলে যাবেন কি না, সেটাই মুখ্য।

 

তিনি মনে করিয়ে দেন, কখনো কখনো ফোন বন্ধ করে কিছুক্ষণের জন্য নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিলেই নতুন অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। সব সিনেমা যুগান্তকারী না হলেও, একটি ভালো গল্প ও অভিনয় মনকে ছুঁয়ে যেতে পারে। তার নতুন সিনেমাটি বড়মাপের বাণিজ্যিক সাফল্যের জন্য বানানো হয়নি—বরং বাস্তবতার ওপর দাঁড়ানো এক গল্প যা দর্শক চাইলে উপভোগ করতে পারেন।

 

তার বক্তব্যে উঠে এসেছে চলচ্চিত্রজগতের বাস্তবতা, দর্শকের পরিবর্তিত অভ্যাস এবং শিল্পীর নিজের প্রতি দায়িত্ববোধ—যা বর্তমান বাংলা সিনেমার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।